চুরি যাওয়া মোবাইলে ছিল প্রবাসী স্ত্রীর গোপন ভিডিও, অতঃপর…

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের বেপারী পাড়া গ্রামে এক প্রবাসীর স্ত্রীর গোপন ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রাজবাড়ীর এক নম্বর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন কুয়েত প্রবাসী মো. ওবায়দুল রহমানের স্ত্রী খাদিজা বেগম (২৬)।

মামলার আসামি হলেন প্রবাসী ওবায়দুল রহমানের প্রতিবেশী মো. লালচাঁদ বেপারীর ছেলে মো. মাহবুব বেপারী (২৫) সহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন। মামলায় খাদিজা বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামীরা তিন ভাই প্রবাসে থাকেন। তিনি তার দুই জা এবং বৃদ্ধ শ্বশুর-শ্বাশুড়ি বাড়িতে থাকেন। ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৯ টার দিকে তারা বাড়ির সবাই রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার ঘরের জানালা দিয়ে তাদের প্রতিবেশী মাহবুব বেপারী তার স্যামসাং ও হুয়াওয়েই কোম্পানির দু’টি স্মার্ট ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। মাহবুব দৌড়ে পালানোর সময় খাদিজা বাইরের লাইটের আলোতে মাহবুবকে স্পষ্ট দেখতে পান। চুরি হওয়া মোবাইল দু’টিতে খাদিজার ও তার স্বামীর ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ছিল।

এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ দিলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না দিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে তারা ঘটনাটি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার সালিশে বসা হয়। শালিসে মাহবুব মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করে মোবাইল ফেরৎ দিবে বলে জানায়। কিন্তু পরে সে মোবাইল ফেরৎ না দিয়ে নানা টালাবাহানা করতে থাকে। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি মাহবুব তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর থেকে খাদিজার নম্বরে একটি মেসেজ পাঠায়। মেসেজে লিখা ছিল, ‘আপনার একটা ভিডিও আমার কাছে আছে।’

এ ছাড়াও মাহবুব খাদিজার ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। মোবাইলে মেসেজ পাঠানোর ঘটনায় খাদিজা ৩০ জানুয়ারি রাজবাড়ী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে মাহবুব অজ্ঞাতপরিচয় ২-৩জন লোক নিয়ে খাদিজার স্বামীর বাড়িতে এসে মোবাইলের মেসেজ পাঠানোর বিষয় নিয়ে খাদিজাকে বেশি বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে। আর মোবাইলের ছবি ও ভিডিও ডিলিট করাতে চাইলে তাকে তিন লাখ টাকা দিতে হবে বলে খাদিজার কাছে চাঁদা দাবি করে। এরপর মাহবুব তার কোমর থেকে ধারালো চাকু বের করে খাদিজাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। সবশেষ গত ৩১ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে মাহবুবও খাদিজার কাছে টাকা দাবি করে।

এ ঘটনায় নিরুপায় হয়ে খাদিজা মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাজবাড়ীর বিজ্ঞ এক নম্বর আমলি আদালতে মাহবুবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ওসিকে ঘটনাটি তদন্ত করে আগামী ২২ আগস্টের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।